গ্রাম থেকে শুরু প্রেম অতঃপর ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে গ্রাম ছেড়ে গাজীপুর শহরে চলে আসেন দু’জনেই।অন্তহীন প্রেম থেকে একসময় গভীর সম্পর্কে রূপধারণ করে দুজনের ভালোবাসার অনুভূতি ,এরপর বিয়ে। কাপড় ব্যবসায়ী জুয়েল আহমেদ ও পোশাক কারখানা শ্রমিক রেহেনা আক্তারের সংসার অনেকটা হাসি মুখেই কেটে যাচ্ছিলো।

হঠাৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া খুনসুটি । এ ঝগড়া যেনো দুটি জীবন ধ্বংসের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠলো নিমিষেই। বেদম মারপিট ও অত্যাচারের কারণে বাথরুমেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন রেহেনা। এখানেই শেষ নয়,ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয়ঙ্করভাবে স্ত্রীর গলা কাটে পরে সমস্ত শরীরসহ এক নয় দুই নয় সাত টুকরা করে ফেলেন স্বামী জুয়েল!

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কোনো একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। জুয়েল স্ত্রীকে বেদম মারপিট করেন। একপর্যায়ে স্ত্রী রেহেনা জ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখনই জুয়েল রেহেনার গলা কেটে ফেলেন। এরপর দেহটি কেটে কেটে সাত টুকরা করেন তিনি। বস্তায় ভরে রাতেই আবার টুকরাগুলো ময়লার স্তূপে লুকিয়ে ফেলেন।


এ ঘটনার তিনদিন পর রোববার দুপুরে নিহত রেহেনার মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করেছে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। অভিযুক্ত জুয়েল গাজীপুর সদরের মণিপুর এলাকার জাকির হোসেনের ভাড়াটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত রেহেনা সুনামগঞ্জের পলাশ ইউনিয়নের কাচিরগাতি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে। আর স্বামী জুয়েল একই গ্রামের আবদুল বাতেনের ছেলে। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের পর দুই বছর আগে বিয়ে হয়।

গাজীপুর সদরের মণিপুর এলাকার জাকিরের বাড়িতে ভাড়া থেকে রেহেনা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। পাশাপাশি জুয়েলের ছিল ফেরি করে কাপড় বিক্রির ব্যবসা। গত বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের জেরে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্ত্রী রেহানাকে পেটাতে শুরু করে জুয়েল অত্যাচারের ফলে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায় স্ত্রী রেহানা। ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে ওই রাতেই ৭ টুকরো করে বস্তায় ভরে ময়লার স্তূপে ফেলে দিয়ে আসে পাষণ্ড স্বামী জুয়েল।

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, স্থানীয় এক যুবক ময়লার স্তূপে একটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখেন। এদিকে ঘটনার পরদিন থেকেই জুয়েলের আচরণ সন্দেহ করছিলেন প্রতিবেশীরা। একপর্যায়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে জুয়েলকে আটক করলে ঘটনার বিস্তারিত জানান তিনি।
মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি। এছাড়া এ ঘটনায় নিহত রেহেনার ভাই বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।